top of page

শুধুমাত্র বেদই প্রামাণিক?

Updated: Jul 13, 2021



আমরা নতুন যুগের হিন্দু যুব সমাজ, হিন্দুরা শাস্ত্রচর্চা থেকে দূরে ছিল বহুদিন,এখন ফেসবুক, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা সচেতন হিন্দু হয়েছি। এখন আমরা ফেসবুক থেকে ডাউনলোড করে পিডিএফ বেদ পড়ি। গুরুকূল?! আরে সে তো পুরনোকালের কথা। আমরা আগের থেকে অনেক বুদ্ধিমান। আমাদের গুরুকূল লাগে না। আমরা পিডিএফ পড়েই সব জেনে যাব। আমরা হলাম বুদ্ধিদীপ্ত সচেতন হিন্দু যুব সমাজ। আমরা পুরাণ-টুরাণ ওসব মানিনা। আমরা খালি চারটা বেদ মানি। বাকি কোনকিছু আমরা কোনমতেই মানব না! না! না! আমি বলছি না। তবে বর্তমান হিন্দু যুবসমাজের একাংশ এমনই বলছে। শাস্ত্রজ্ঞান লাভ কোন কালেই সহজ ছিল না! আর অধ্যয়ন করে শাস্ত্রের প্রকৃত অর্থ বোঝা কতটা কঠিন তা বলাই বাহুল্য। শাস্ত্রের বহুবিধ বাক্যের দ্বারা কপিল মুনির মতো তত্ত্ববেত্তাগণও বিভ্রান্ত হয়েছেন। এর প্রধান কারণ হল শাস্ত্রের ভেদ। শাস্ত্রে একেক জায়গায় একেক কথা দেখা যায়, যার প্রকৃত অর্থ হৃদয়ঙ্গম করা খুবই জটিল। এজন্য বৈদিক যুগে শিক্ষার্থীরা গুরকূলে গিয়ে কঠোর সংযম ও তপস্যার মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর সময় দিয়ে শাস্ত্র অধ্যয়ন করত। ফলে বিভ্রান্তি দূরীভূত করে তারা প্রকৃত সিদ্ধান্ত বুঝতে সক্ষম হতো। কিন্তু গুরুকূলে যাওয়া, সংযম রাখা, ব্রহ্মচর্য রাখা এসব সেকেলে জিনিসপত্র করার সময় কী আমাদের যুব সমাজের আছে? তারা নতুন যুগের মানুষ। লাইফটাকে enjoy করতে হবে,প্রগতিশীল হতে হবে, যুগের সাথে তাল মেলাতে হবে। গুরুকূলে যাওয়া, সংযম সাধন করা এসব করলে তো লোকে backdated বলবে। তাই ওসবের ধার-কাছ দিয়েও তারা যান না। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সচেতন হিন্দু না সাজলে যে মুখ পুড়বে।🤭 তা কী হতে দেয়া যায়? মোটেও না! কাজেই শাস্ত্রাধ্যয়ন তো করতেই হবে। এজন্য আমাদের সচেতন হিন্দু যুবসমাজের একাংশ একটা খুবই সহজ উপায় বের করছেন। সেটা হল AUTHENTICITY JUDGEMENT . এমনিতেও আমাদের যুব সমাজ খুবই judgemental. সবকিছু যখন judge করছিই তাহলে শাস্ত্রটাকেও judge করে ফেললেই ল্যাঠা চুকে গেল। বুঝলেন না? শাস্ত্রের যেখানে ভেদ দেখব সেখানে খামোখা গবেষণা, বিচার- বিশ্লেষণ করে সময় নষ্ট না করে সেটাকে প্রক্ষিপ্ত বলে দিলেই হল। এতে করে লাভ হয় দু'টো, (১) খামোখা কোন এক বুড়ো গুরুর লেকচার শুনতে হবে না। (২) শাস্ত্রের যেসব নিয়ম ভালো লাগবে না সেগুলো প্রক্ষিপ্ত বলে উড়িয়ে দিলেই হল। ব্যাস! প্রগতিশীল হতেও আর কোন বাধা থাকল না। আর এইসকল benefit এর কারণে ১৫০ বছর পুরনো প্রক্ষিপ্ততাবাদী একটি সংগঠন খুব জনপ্রিয় হয়েছে হিন্দু যুবসমাজের কাছে। তো সে যাই হোক! প্রশ্ন হল এরম AUTHENTICITY JUDGEMENT করে আসলেই কী শাস্ত্রের কোন অংশকে প্রক্ষিপ্ত বলে বাদ দিয়ে দেয়া যায়? উত্তর হল ‘কেন বাদ দেয়া যাবে না? অবশ্যই যায়!’ তবে সেটা কখন আর কীভাবে বাদ দিতে হবে সেটা বুঝতে হবে। যারা এরকম শাস্ত্রের প্রামণ্যতা বিচার করন তারা তিনটি জিনিসের ভিত্তিতে তা করে থাকেন। (১) শ্রুতিবিরুদ্ধ বিষয়সমূহ বর্জন তথা প্রক্ষিপ্ত বলা (২) কোথাও খারাপ কোন কিছু দেখলে সেটা বর্জন তথা প্রক্ষিপ্ত বলা। (৩) কিছু গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রক্ষিপ্ত বলা তো প্রথমে দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়ে একটু আলোকপাত করি। সনাতন শাস্ত্রে মানবতা বিরোধি পাষন্ডী কোনকিছু থাকতে পারে না। এটি ধ্রুব সত্য। যদি এরকম কোনকিছু পাওয়া যায় তাহলে তাকে পাষন্ডী বলেই ধরতে হবে। কিন্তু কোন বিষয়টা মানবতা বিরোধী, কোন বিষয়টা পাষন্ডী সেটা বিচারের মানদন্ড কী হবে? বর্তমানে যারা বিভিন্ন গ্রন্থকে প্রক্ষিপ্ত বলে চালাচ্ছেন তারা কতগুলো আধুনিক মতবাদের ভিত্তিতে শাস্ত্রের প্রামাণিকতা বিচার করছেন। যেমন বেদ- পুরাণে নারীদের কর্তব্য-অকর্তব্য সম্বন্ধে যা বলা হয়েছে সেগুলোকে Feminism এর আলোকে বিচার করছেন, বর্ণাশ্রম ধর্মকে আধুনিক তথাকথিত মানবতাবাদের ভিত্তিতে বিচার করছেন, vedic cosmology কে জড় বিজ্ঞানের আলোকে বিচার করছেন। আর এইভাবে বিচার করে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে নিজের মনমতো করে শাস্ত্রের ভাষ্যও তৈরি করছেন। এখন একটু ভালোভাবে চিন্তা করুন। শ্রুতি,স্মৃতি,ইতিহাস,পুরাণ এইসবই সহস্র বছর ধরে ঐশ্বরিক জ্ঞান কিংবা মহান ঋষিগণের কথিত উপদেশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সহস্র বর্ষ প্রাচীন আমাদের আচার্য বর্গও তেমনই মত প্রদান করেছেন। এখন ঈশ্বরীয় জ্ঞান কিংবা দিব্যজ্ঞানী ঋষিদের বাক্যসমূহকে এরকম জড় মতবাদ দিয়ে বিচার করা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ এই সমস্ত মতবাদ সাধারণ দেহধারী মানবের দ্বারা সৃষ্টি। তাই স্বভাবতই এগুলোতে ভ্রান্তি থাকবেই। বিশেষত জড় বিজ্ঞান যে ভ্রান্তিপূর্ণ তা নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছে। [https://www.facebook.com/107617301044956/posts/238047028001982/] তাহলে আর যাই হোক অন্তত এসব আধুনিক মতবাদের ভিত্তিতে শাস্ত্রের বিচার করা মানায় না। তাহলে এখন প্রশ্ন হল কীভাবে বিচার করতে হবে? সেটা নিয়ে একদম শেষে আমরা আলোচনা করব। তার আগে কী করতে হবে সেটা বলি। শাস্ত্র অধ্যয়নের সময় অসংখ্য বিষয়ে আমাদের সংশয় উৎপন্ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশয় উৎপন্ন হলেই সেটাকে বাদ দিয়ে দেয়া যাবে না। নব্য শিষ্যের পক্ষে কখনোই শাস্ত্রের সমস্ত বাক্যের তাৎপর্য যথাযথভাবে হৃদয়ঙ্গম করাও সম্ভব নয় আর শাস্ত্রের ভেদ বোঝার কথা তো বলাই বাহুল্য। তাই শাস্ত্রে কোন বিষয় অধ্যয়নের পর তা নিয়ে হৃদয়ে শঙ্কা উপস্থিত হলে আমাদের এমন কারোর কাছে যেতে হবে যিনি শাস্ত্রের গূঢ় তত্ত্ব ইতোমধ্যে হৃদয়ঙ্গম করেছেন। সেটা না করে স্বয়ং শাস্ত্রের দোষ ধরতে বসা কখনোই উচিৎ নয়। এগুলো কেবলমাত্র কোন তাত্ত্বিক উপদেশ নয়। এটা ব্যবহারিক কথা। আপনারা যথাযথভাবে অনুসন্ধান করলে দেখবেন যে শাস্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় ভেদ দর্শন করে প্রক্ষিপ্তবাদীরা যেগুলোকে বাদ দিয়ে দিচ্ছে, সেই সবগুলোর ব্যাখ্যাই পূর্বাচার্যরা দিয়ে গিয়েছেন। এখন যদি কোন একটি বিষয়ের জন্য উপযুক্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তাহলে, অযথা সেটাকে বাদ দিয়ে দেয়া নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বরং এরকমভাবে সবকিছু বাদ দিয়ে দেয়ার ফলে সনাতন সংস্কৃতিই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেবল খেয়াল করে দেখুন এসকল প্রক্ষিপ্তবাদীরা মূর্তিপূজা করে না, তারা কীর্তন-কে বাদ দিয়ে দিতে চায়,মন্দিরে পূজা করার বিরোধিতা করে, রথযাত্রার বিরোধিতা করে, গঙ্গা- যমুনাদির তীরে আরতি প্রদর্শন করার বিরোধিতা করে। এখন এগুলো তো কেবল ধর্মাচরণ নয়। এসব হল সুমহান সনাতন সংস্কৃতি। কিন্তু না জেনে বোঝে সবকিছুকে বাদ দিয়ে দেয়ার ফলে এইসকল সংস্কৃতিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আজ ভারতের বাইরে সারাবিশ্বে সনাতনীদের পরিচয়ের একটা বড় কারণ হল এসকল সংস্কৃতি। এসকল সংস্কৃতি ধ্বংস হলে ক্ষতি বৈ লাভ কিছুই হবে না। তাই ভালোভাবে না জেনেবুঝে কোনকিছু বাদ দিয়ে দেয়া কখনোই বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারেনা। বরং শাস্ত্রবেত্তা আচার্যগণের কাছে তত্ত্বানুসন্ধানই বুদ্ধিমানের কাজ। আর এই একই কথা প্রযোজ্য প্রথম বিষয় অর্থাৎ শ্রুতির সাথে অন্যান্য শাস্ত্রের বিরোধ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নব্য বিদ্যার্থীদের নিকট অনেক বিষয়ই শ্রুতি বিরুদ্ধ মনে হতে পারে। কিন্তু দেখা যায় আচার্যগণ এসব বিষয়ে সুষ্ঠ ব্যাখ্যা প্রদানের দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে সেগুলো আদৌ শ্রুতিবিরুদ্ধ নয় বরং শ্রুতির কথাকেই সরলভাবে প্রকাশ করছে। এক্ষেত্রে একটা উদাহরণ না দিলে ভুল হবে। প্রক্ষিপ্তবাদীরা পুরাণকে বেদবিরোধী বলে। কিন্তু শ্রীআনন্দতীর্থ মধ্বাচার্য তত্ত্বমুক্তাবলী নামক গ্রন্থে পুরাণ শাস্ত্রকেই বেদের যথার্থ অর্থ প্রকাশক বলেছেন। এখন মধ্বাচার্য নিশ্চয়ই অজ্ঞানতাবশত এসব কথা বলেননি। পুরাণের সমস্ত বিরোধ বাক্যের উপযুক্ত ব্যাখ্যা তার কাছে ছিল বলেই তিনি এমন কথা বলেছেন। এর থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে নব্য প্রক্ষিপ্তবাদীরা যথাযথ বিশ্লেষণ না করেই অনকে গ্রন্থকে প্রক্ষিপ্ত বলে দেন। যা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এবার আসি তৃতীয় বিষয় অর্থাৎ গবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে শাস্ত্রে দোষ দেয়ার বিষয়ে। প্রক্ষিপ্তবাদীদের মধ্যে অত্যন্ত বুদ্ধিমান শ্রেণির একদল প্রাণি রয়েছেন যারা বলে থাকেন যে ইতিহাস, পুরাণ সবই শাস্ত্র কিন্তু মধ্যযুগে এগুলোর মধ্যে মিথ্যা কথা ঢোকানো হয়েছে। তাই এগুলো এখন মানা উচিৎ না। এখন তাদের এই কথার সপক্ষে কোন শক্ত প্রমাণ কিন্তু তাদের কাছে নেই। বা কোন প্রাচীন পুথিও তাদের কাছে নেই। আবার সম্প্রতি তারা বলছেন যে কোন এক ইনস্টিটিউট মহাভারতের একাধিক প্রাচীন পুথি সংগ্রহ করেছে এবং সেগুলোর মধ্যে তুলনা করে তারা নির্ধারণ করেছেন যে মহাভারতের ৬৪০০০ শ্লোকই কেবল প্রামাণিক। তো ঐ ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা এটা কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে ঐ পুঁথিগুলোর মধ্যে কোন একটা অরিজিনাল এবং সম্পূর্ণ? কোন একটি পুথি যদি সম্পূর্ণ authentic না হয় তাহলে সেগুলোর মধ্য তুলনামূলক বিচার করে authenticity judgement অবশ্যই অনুচিৎ। এতক্ষণ ধর্মসংশয় নিরূপণের অধুনা প্রচলিত পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করলাম। এবারে দেখা যাক শাস্ত্র এবিষয়ে কী বলে। ধর্মসংশয় নিরূপন বিষয়ে মনুস্মৃততির দ্বাদশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, দশাবরা বা পরিষদ্ যং ধর্ম্মং পরিকল্পয়েৎ। ত্র্যবরা বাপি বৃত্তস্থা তং ধর্ম্মং ন বিচালয়েৎ।। ১১০ অর্থাৎ, যদ্যপি অনেক ব্যাক্তি সন্নিহিত না থাকে, তবে দশের ন্যূন না হয়, এমত ধর্মজ্ঞ তাহার অভাবে তিনের ন্যূন না হয়, ঐরূপ বিদ্বান সদাচারী সম্পন্ন সভাকে পরিষৎ বলা যায়, উক্ত পরিষৎ যে ধর্ম নিশ্চয় করিবেন, উহাকে স্বীকার করিবে, পরিত্যাগ করিবে না। এই শ্লোকে ধর্মসংশয় নিরূপন করে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য দশাবরা অথবা ত্র্যবরা পরিষদের কথা বলা হয়েছে। এরপরের দুই শ্লোকে দশাবরা ও ত্র্যবরা পরিষদের গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ত্রৈবিদ্যো হৈতুকস্তর্কী নৈরুক্ত ধর্ম্মপাঠকঃ। ত্রয়শ্চাশ্রমিণঃ পূর্ব্বে পরিষৎ স্যাদ্দশবারা।। ১১১ অর্থাৎ,বেদত্রয়ের শাখাত্রয়ের অধ্যয়নকারী, শ্রুতি ও স্মৃতির অবিরুদ্ধ ন্যায়শাস্ত্রজ্ঞ, বেদাঙ্গনিরুক্তশাস্ত্রজ্ঞাতা, মানবাদিধর্মশাস্ত্রজ্ঞ, ব্রহ্মচারী কিবা গৃহস্থ অথবা বানপ্রস্থ দশের ন্যূন না হয় ইহাদিগকে পরিষৎ বলা হয়। ঋগ্বেদবিদ্ যজুর্ব্বিচ্চ সামবেদবিদেব চ। ত্র্যবরা পরিষজ্জ্ঞেয়া ধর্ম্মসংশয়নির্ণয়ে।। ১১২ অর্থাৎ, ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ এবং সামবেদে বিশেষজ্ঞ এই তিন পরিষদ ধমসংশয় উপস্থিত হইলে, যাহা নিরূপণ করিবেন তাহাই করিবে। এখন প্রক্ষিপ্তবাদী যুবসমাজে এমন পরিষদ গঠন করার মতো সুযোগ্য ব্যাক্তি কিন্তু নেই। এমনকি তারা যেসকল সংগঠনের অনুসারী সেসকল সংগঠনেও কখনোই এরকম পরিষদ গঠন করে পূর্বাপর বিচারপূর্বক ধর্মসংশয় নিরূপন করেননি। বরং অল্পবিজ্ঞ একজন সন্ন্যাসীর ইঙ্গিতের উপর ভিত্তি করে বিচার করেছেন। এধরণের মত কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এতদ্বিষয়ে মনুস্মৃতির এই অধ্যায়েই বলা হয়েছে, অব্রতানামমন্ত্রাণাং জাতিমাত্রোপজীবিনাম্। সহস্রশঃ সমেতানাং পরিষত্ত্বং ন বিদ্যতে।। ১১৪ অর্থাৎ, গায়ত্রী প্রভৃতি ব্রহ্মচারিব্রতবিহীন এবং বেদাধ্যয়নবিহীন, ব্রাহ্মণজাতিমাত্রধারী এরূপ বহুসহস্র ব্যাক্তিরও পরিষত্ব নাই। অর্থাৎ ইহাদের উপদেষাদি গ্রাহ্য হইতে পারেনা। বর্তমান যুবসমাজ যারা বিভিন্ন শাস্ত্রে দোষ দেয় তাদের কারোরই ব্রহ্মচর্য নেই। কাজেই তাদের কখনো নিজে নিজে বিশ্লেষণ করে শাস্ত্রে দোষ দেয়া উচিৎ নয়। বরং শাস্ত্রোক্ত বিধিপূর্বক পরিষদ গঠন করে তাদের সিদ্ধান্ত-কেই মান্য করা উচিৎ এবং পরম্পরাগত আচার্য্যের নিকট হতেই শাস্ত্রাধ্যয়ন করা উচিৎ। তাহলে খুব ভালোভাবেই এটা উপলব্ধি করা যাবে যে শ্রুতি, স্মৃতি, ইতিহাস, পুরাণ, পঞ্চরাত্র সবই প্রামাণিক। সবগুলোই AUTHENTIC। কেবলমাত্র বেদই AUTHENTIC এমন মতবাদ আদরণীয় নয়। আর এরপরেও যদি কোন অনভিজ্ঞ ব্যাক্তি স্বকপোল-কল্পিত বিশ্লেষণ দ্বারা শাস্ত্রে দোষ দেয় তাহলে তার জন্য মহাভারতে বলা হয়েছে, যে তু ধর্মানসুয়ন্তে বুদ্ধিমোহান্বিতা নরাঃ। অপথা গচ্ছতাং তেষামনুযাতা ত পীড্যতে।। যে মনুষ্য বুদ্ধি মোহ দ্বারা যুক্ত হইয়া ধর্ম তথা ধর্মাদি শাস্ত্রে দোষ দেখিয়া থাকে তিনি স্বয়ং কুমার্গগামী হইয়া থাকেন, এবং তার পিছে যাহারা চলে তাহারাও অধর্মে প্রবৃত্ত হয় এবং পরে কষ্ট ভোগ করে। (মহাভারত, বনপর্ব, ২০৯।৬৮) কাজেই প্রক্ষিপ্তবাদী না হয়ে আচার্য অনুগত্যে অধ্যয়ন করুন।

18 views0 comments
Be Inspired
bottom of page